Bangla Golpo [গল্পটা পুরোপুরি কাল্পনিক,এর সাথে বাস্তবতার কোন সম্পর্ক নেই] আমাদের পৃথিবী(Earth) ছাড়াও কি অন্য কোনো সৌরজগৎ বা গ্রহে প্রাণ থাক...
Stories _Unknown
Bangla Golpo
[গল্পটা পুরোপুরি কাল্পনিক,এর সাথে বাস্তবতার কোন সম্পর্ক নেই]
আমাদের পৃথিবী(Earth) ছাড়াও কি অন্য কোনো সৌরজগৎ বা গ্রহে প্রাণ থাকতে পারে? বা পৃথিবীর মতো অন্য কোন গ্রহ থাকতে পারে? অথবা আপনার বা আমার মতো একদম হুবহু দেখতে মানুষ কি অন্য কোন এক সৌর জগতে বসবাস করছে? এটাও কি সম্ভব? বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী, এটা সম্ভব।আর এই ধারনা থেকেই আসে প্যারালাল ওয়ার্ল্ড বা প্যারালাল ইউনিভার্স থিওরি।অবশ্য এই থিওরির বীপরিতে অনেকের মতবাদ আছে।
নির্দিষ্ট সংখ্যার প্যারালাল ইউনিভার্সকে মাল্টিভার্স বলা হয়।বিগ ব্যাং থিওরির পর থেকেই প্যারালাল ইউনিভার্স সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের জানার আগ্রহ বেড়ে যায়।অনেকের মতে,এই মহাবিশ্বে আমাদের সৌরজগৎ বা পৃথিবী গ্রহের মতো হুবহু আরও অনেক সৌরজগত এবং গ্রহ রয়েছে।প্যারালাল ইউনিভার্সের ধারণা অনুযায়ী, হয়তো এই গ্রহে আপনি একজন ডাক্তার হলে অন্য প্যারালাল বিশ্বের গ্রহে আপনি একজন ক্রিকেটার হতে পারেন।আবার আমারা যা কল্পনা করি তা হতে পারে অন্য কোন মাল্টিভার্স-এর রিয়ালিটি।
প্যারালাল ইউনভার্স সম্পর্কে অনেকর দ্বিমত পোষণ থাকলেও অনেকেই এটা নিয়ে গবেষণা করে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।তেমনি একজন সফল গবেষক বাংলাদেশের আনোয়ার হোসেন।আনোয়ার হোসেনের বয়স প্রায় ৬৫ ছুইছুই,পরিবার বলতে তার শুধু রয়েছে ছোট ৬ বছরের একটা নাতিন নাম হিমেল।আজ দাদু নাতিন মিলে আনোয়ার হোসেনের ল্যাবে এসছে।ল্যাবে আজ কেউ নেউ,ল্যাবের অন্যনো সহকর্মিকে আজ ছুটি দিয়েছেন আনোয়ার হোসেন।
ল্যাবে এসেই ছোট হিমেল হা করে আছে,তার দাদু আনোয়ার হোসেন তার নাতির এভাবে হা করা দেখে একহাত দিয়ে মুখটা বন্ধ করে দিল আর বলল...
দাদুভাই আমি জানি আজ তুমি এখানে প্রথম তবে এভাবে থাকলে যে মুখে মশা ডুকবে আর মশা পেটে গেলে আর মারতে পারবা না ভিতর থেকেই মশা কামরাবে (আনোয়ার হোসেন)
দাদুর কথা শুনে চোখ বড়বড় এবার নিজের মুখ নিজেই চাপ দিয়ে ধরল হিমেল আর আশপাশটা দেখতে লাগল।তার দাদু একটু মুচকি হাসল আর দেখতে লাগল কি করে তার নাতি।
হিমেল একটু পরপর একেকটা জিনিস তার দাদুর কাছে জিজ্ঞাস করছে আর তার দাদু খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিচ্ছে।যদিও প্রায় সব কিছুই হিমেলের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
একটু পর হিমেল ল্যাবের এক কোণে এসে পৌছায় আর দেখে একটা বৄত্তাকার মেশিনের মত কিছু একটা।কৌতহলী মনে দাদুর দিকে চাওয়ার পর দাদু বলে উঠে ...
এটাই সেই কাঙ্খিত জিনিস যার ফলে আমরা অন্য মাল্টিভার্সে যেতে পারব,তবে এটা এখনো সম্পূর্ণ নয় দাদুভাই(আনোয়ার হোসেন)
দাদুর কথা তেমন না বুঝলেও মেশিনটির দিকে তাকিয়ে হিমেলের চোখ ছলছল করে ওঠে।হঠাৎ হিমেল মেশিনটির একবারে কাছে চলে যায় আর কাছে থেকে মেশনটির বৃত্ত মত জিনিসটা ধরে দেখতে থাকে।তার দাদুও পিছে পিছে ধরতে আসে কিন্তু মেশিনের কাছে যাওয়ার আগে নিচে পরে থাকা একটা তারের সাথে হোচট খায়।তারটি ছিলো একটি লাইন বোর্ডের তার,হ্যাচকা তারে টান লাগতেই লাইনবোর্ডের ইলেকট্রিকাল সটসার্কিট হয়।লাইনবোর্ডের একটি লাইন সেই মেশিনটাতেও গেছে।কিন্তু মেশিনটা সর্টসাকিটে খারাপ হওয়ার বদলে মেশিনের সেই বৃত্তের মধ্যে কালো একটা কিছু তৈরি হয় পুরোটা জুরে।যা বৃত্তর উভয় পাশ থাকে প্রচন্ড গতিতে সব কিছু টানতে থাকে।মুহূতেই যেন ল্যাবের মধ্যে ঝর সৃষ্টি হয়।ছোট হিমেল কোন মত বৃত্তের বাইরে হাত দিয়ে আকড়ে ধরে কিন্তু এতে যেন কোন কাজ হচ্ছেনা।হিমেলের অর্ধেক শরীর বৃত্তের ভিতরে চলে গেছে ।তার দাদু কোনমতে একটা শক্ত টেবিল ধরে আর তার নাতির দিকে একনজর তাকিয়ে এই ঝড়ের মধ্যে ও চেষ্টা করতে থাকে মেইনসুইচ বন্ধ করার।ঠিক সেই মহূর্তে কোথাথেকে যেন একটা বক্স উরে আসে আর হিমেলের কাধে লেগে।ছোট শরির ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে আর হাত ছেড়ে দেয় ।মহূর্তে হারিয়ে যায় বৃত্তের দেই অন্ধকারে ছোট শরীর।
আনোয়ার হোসেন তার নাতির অবস্থা দেখে একটা জোরে চিৎকার দেয়,কিন্তু আনোয়ার হোসেনর চিৎকার শেষ হওয়ার আগেই একটা বিস্ফোরন হয় ল্যাবের মধ্যে।মহূর্তেই হারিয়ে যায় দুটি প্রাণ......
(এটা আমার লেখা সর্বপ্রথম গল্প,জানিনা কেমন হল।চেষ্টা করব প্রতিদিন পর্ব দেওয়ার,লেখায় ভুলগলো দয়া করে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
#পার্ট:1
#writer:হিমেল
Unknown
Bangla Golpo পুত্র: বাবা, আমি বিয়ে করতে চাই।💏 পিতা: স্যরি বল্।🤨 পুত্র: কেন!🤔 পিতা: স্যরি বল্।🤨 পুত্র: কিন্তু কেন?🤔 পিতা: আগে স্যরি বল্।...
আমি বিয়ে করতে চাই
Bangla Golpo
পুত্র: বাবা, আমি বিয়ে করতে চাই।💏
পিতা: স্যরি বল্।🤨
পুত্র: কেন!🤔
পিতা: স্যরি বল্।🤨
পুত্র: কিন্তু কেন?🤔
পিতা: আগে স্যরি বল্।😤
পুত্র: কিন্তু আমার ভুলটা কোথায়?🤔
পিতা: তুই আগে স্যরি বল্।😠
পুত্র: অন্তত কারণটা তো বলো!🧐
পিতা: আগে স্যরি বল্।😬
পুত্র: ঠিকাছে বাবা! স্যরি। 🙏আমি দুঃখিত।🙏
পিতা: এইমাত্র তুই বিয়ের যোগ্য হয়ে উঠলি ব্যাটা। 😎দোষ না-করেও স্যরি বলা শিখে গেছিস তুই।😇 তোর ট্রেইনিং কমপ্লিট। 🤷
অভিনন্দন! 🎉🎈🎊
যা, এবার বিয়ে কর্.....😃😃
ফানি গল্প
Bangla Golpo দারুন একটা গল্প আগে সম্পর্ন গল্পটি পড়ুন। --এই চলো না আমরাবিয়ে করে ফেলি? --কাকে বিয়ে করব? --কাকে বিয়ে করবামানে?আমাকে বিয়ে করবি? ...
গল্পটির নামঃ-বিয়ে পাগলের পাগলি
Bangla Golpo
দারুন একটা গল্প আগে সম্পর্ন গল্পটি পড়ুন।
--এই চলো না আমরাবিয়ে করে ফেলি?
--কাকে বিয়ে করব?
--কাকে বিয়ে করবামানে?আমাকে বিয়ে
করবি?
--কেনো তোমাকে বিয়ে করব?
--মানে কী?তুমি আমাকে ভালবাসো
না?
--হুম ভালবাসলেই বিয়ে করতে হবে নাকি?
--হুম সবাই তো তাই করে প্রেমের পরে বিয়ে?
--সবাই করে করুক,আমি সবার মত না,কবিগন বলে গেছে, যাদের সাথে প্রেম করবে তাকে কখনোই বিয়ে করবে না।
--কী বলছো এসব?
--হুম ঠিকই বলছি।দাঁত উঠছে?
--কার?
--তোমার?
--মানে?
--মানে তুমি যে বিয়ে করবা তোমার দাঁত উঠছে?
---বিয়ে করার সাথে দাঁতের সম্পর্ক কী?
--আছে সম্পর্ক, আক্কেল মাড়ি উঠছে?
--না মানে সেটা কী?
--থাক,তাহলে আমি বেআক্কেলে মেয়ে বিয়ে করতে পারবো না।
--এই দেখো আমি কিন্তু কেঁদে দিবো?
--এই নাও?
--এটা দিয়ে কী করব?
--যখন কাঁদবে তখন এই টিসু দিয়ে চোখ মুছবে।
.
>যা মেয়েটা সত্যি কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো।পাগলী একটা বোঝেও না ওকে ছাড়া আমার একমুহূর্ত চলে না।আসলে নাদিয়া যখন বিয়ের কথা বলে তখন আমি ওকে এভাবেই রাগিয়ে দিই, যার ফলে দুই - তিন
দিন কথা বন্ধ।আমাকেই আবার তার অভিমান ভাঙাতে হয়। আজকে মনে হয় একটু বেশীই কষ্ট পেয়েছে। মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে বিয়ে করলে তো হয় না,ছোট একটা জব করি কোনরকম মা আর বোন কে নিয়ে
সংসার চলে।মা'র ও শরীর টা তেমন ভাল যাচ্ছে না।
.
--ডাক্তার সাহেব মা"র কী হইছে?
--হার্টের সমস্যা,৩ দিনের মধ্যে অপারেশন করাতে হবে না হলে কোন অঘটন ঘটতে
পারে।
<কথাটা শুনেই বুকের
মধ্যে হু হু করে কেঁদে উঠল,কোন মতে
নিজেকে সামলিয়ে নিলাম।
--কত টাকা লাগবে ডাক্তার সাহেব?
--সব কিছু দিয়ে ৩০ হাজার হলে হয়ে যাবে।
.
কথাটা শুনেই যেনো বাজ পড়ল মাথায়। এত্তগুলা টাকা কোথায় পাবো বুঝতেছি না। গতরাতে একটুও ঘুম হয়নি টাকার টেনশনে।ফোনটাও হারামি করছে
আমার সাথে।না আছে ব্যালেন্স না আছে
চার্জ। নাদিয়া আবার না জানি টেনশন করে
বসে। এমনি তে সেদিন অভিমান করছে।।।
আসলে নাদিয়ার সাথে কথা বলার পর,
বাড়ীতে এসেই দেখি মা অসুস্হ হয়ে
গেছে যার ফলে মা এখন বি- বাড়ীয়া সদর
হসপিটালে ভর্তি
.
অফিসের বসের কাছ থেকে যে টাকা
নিবো তারও উপায় নেই,মাসও পুজতে এখনো দশদিন বাকি।
টাকাতো দিবে না বরং কথা শোনাবে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে
বাসায় চলে এসেছি বুঝতে পারিনি।
--ভাইয়া মার কী হইছে?
--তেমন কিছু নারে, সব ঠিক হয়ে যাবে।
--আমি মার কাছে যাবো।
--সন্ধ্যা বেলা এসে আমি তোকে নিয়ে
যাবো।
--ঠিক আছে ভাই,হাতমুখ ধুয়ে আয়খেতে দিই।
>নাহ খেতে ইচ্ছা করছে না,টাকার খোজে
আবার বেরিয়ে পড়লাম। যত সমস্যা কী এই মধ্যবিত্তদেরই হয়,জীবন টা বড়ই কঠিন এই মধ্যবিত্তদের জন্য, নূন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্হা।
.
.
সারাদিন কারো কাছে গিয়েও টাকা পেলাম না।সবাই কোন না কোন অজুহাত দিলো হয়তো ভাবে যদি টাকা ফেরত দিতে না পারি।আসলে বিপদে পড়লে বন্ধু চেনা যায়। নাহ বাড়ীতে আর যেতে ইচ্ছা করছে না। বাড়ীতে গেলেই ছুটকি আবার বায়না ধরবে মার কাছে যেতে। নাহ আজ আর বাড়ীতে
যেতে ইচ্ছা করছে না
.
--কোনমতে পার্কের বেঞ্চেই শুয়েই রাতটা কাটিয়ে দিলাম।
>কাল সারাদিন মাকে দেখতেই যায় নি।
আজ একটু দেখে আসি। নার্সরা এখন আর টাকা না দিলে রোগীর খেয়াল কম রাখে। সব এখন টাকার খেলা। টাকা থাকলে বাঘের চোখও মেলে এখন।টাকা যেখান থেকেই হোক জোগাড় করতে হবে সেটা ডাকাতি কিংবা চুরি করে।
.
>হসপিটালে ঢুকতেই ডাক্তার সাহেবের সাথে দেখ্খা।
--ডাক্তারসাহেব,,,মা,কেমমমমমম,,,?(কথাটাশেষ নাকরতেই,ডাক্তারসাহেববলতে লাগল)
---আরে আবির সাহেব যে,আপনার মা সুস্হ আছে। কোন সমস্যা নাই কিছুদিন পরেই আপনার মা কে বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।
--মা সুস্হ, অপারেশন কীভাবে কিছুই তো
বুঝতেছি না।আমি তো টাকা দেয়নি।
--আপনার স্ত্রী এসেই তো গতরাতে টাকা
জমা দিলো।তাই দেরি না করে গতরাতেই অপারেশন করে দিলাম।
--আমার স্ত্রী মা,মা,মানে,,,?
---আরে আবির সাহেব আর মানে মানে করা লাগবে না।যান মায়ের কাছে যান।
>কিছুই মাথায় ঢুকতেছে না।কিভাবে কী
হলো।
--ভাইয়া তুই এসেছিস,
--ছুটকি তুই এখানে,?মা কেমন আছো তুমি?
--এইতো বাবা ভাল আছি।কি অবস্হা করেছিস শরীরের তুই।
--না মা এইতো ঠিক আছি।
--ছুটকি এদিক আয় তো, কি হয়েছে বলতো
আমাকে।
-- গতরাতে ভাবি নিয়ে এসেছে।
--ভাবি মানে?
--তুই সকালে বেরিয়ে যাওয়ার পর নাদিয়া ভাবি আসছিলো তোর কাছে।তুই নাকি
দুদিন ধরে ফোন বন্ধ রেখেছিস।আর
আমার কাছ থেকে সব শুনে বলল রাতে এসে আমাকে নিয়ে যাবে। তারপরই তো সব হলো।
--হুম বুঝলাম
--ভাইয়া ভাবি টা অনেক সুন্দর।কবে বিয়ে করলিরে, এতো সুন্দর ভাবিকে রাখবি কোথায়।
--এতো বুঝে তোর কাজ নেই।
--ভাইয়া শোন আসল কথা বলতেই তো ভুলে
গেছি,ভাবি তোকে বিকাল ৪ টাই দেখা করতে বলেছে।
--আচ্ছা তুই মা"র কাছে থাক, আমি তোর ভাবির সাথে দেখা করে আসি।
.
>মাথা থেকে যেনো কত বড় একটা
বোঝা নেমে গেলো।যদি কোন ভালবাসার বোঝাটা নামিয়ে দেয় তাহলে তার
সুখরে অনুভূতিটা অন্যরকম।এসব মেয়েকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়। আর দৌড়াতে দৌড়াতে বিয়া করা
যায়।
.
বিকাল ৪ টা,,,,, দুজনের মুখে কোন কথা নেই।জানি নাদিয়া কথা বলবে না।তাই আমাকে শুরু করতে হবে,
--নাদিয়া টাকা টা আমি শোধ করে
দিবো আস্তে আস্তে মাসের বেতন পেলে।
--তোমাকে টাকা শোধ করার কথা বলার জন্য এখানে ডাকেনি। (রাগান্বিত কন্ঠে)
--না মানে,
--আমাকে বিয়ে করবা কবে বলো?
--আসলে তোমার টাকাটা শোধ করেনি
তারপরে চিন্তা করব,
--টাকা শোধ করতে পারলে বিয়ে করবা তো?
--হ্যা,না মানে,,,,?
--ঠিকআছে,,,মনে করো ঐ টাকা শশুর বাড়ী থেকে যৌতুক নিছো।
--না আমি যৌতুক নিবো না।
--তাহলে মনে করো ঐ টাকা তোমার শশুর
আমাকে দিছিলো।আর আমি আমার স্বামীকে দিছি।এবার হইছে তো।
--আসলে,,,?
--আসলে তুমি যে কতটা পর ভাবো আমাকে সেটা বোঝা হয়ে গেছে।
তোমার মা"র এই অবস্হা একবার জানানোর প্রয়োজনবোধ করলে না আমাকে।
--জানই তো ফোনটা বন্ধ ছিলো।
টেনশনে কিছুই মাথায় আসেনা।
--হইছে আর অজুহাত দেখানো লাগবে না।
চলো,,,,,
--কোথায়?
--বিয়ে করতে,,?
--এখন মানে কীভাবে,তোমার বাবা- মা
জানলে,,,?
--যেভাবে আছি সেভাবে।আর বাবা-মা সব জানে।তারা তার মেয়ের সুখের জন্য সব
করতে পারে সেটা তুমি ভালই জানে।
--এভাবে বিয়ে করবা?
--তোমার তো টাকা নেই তাই এভাবেই বিয়ে করব।টাকা যখন হবে তখন ধূমধাম করে করবে,,,
সমাপ্ত গল্প
--কেমন হয়েছে অবশ্য জানাবেন সবাই __
Bangla Golpo #লেখনীতেঃ কথা চৌধুরী❤ কত করে বললাম যে, আমি এই কোচিং-এ যাবো না। তাও আব্বু আমাকে জোর করে ভর্তি করিয়েছেন। আব্বুর বন্ধুর কোচিং সেন্...
গল্প___আই লাভ ইউ টু❤❤
#লেখনীতেঃ কথা চৌধুরী❤
কত করে বললাম যে, আমি এই কোচিং-এ যাবো না। তাও আব্বু আমাকে জোর করে ভর্তি করিয়েছেন। আব্বুর বন্ধুর কোচিং সেন্টার তাই আমি মানা করা সত্ত্বেও আমাকে জোর করে ভর্তি করলেন। কী আর করার? আব্বুর কথা তো আর অমান্য করতে পারবো না। তাই ভর্তি হয়ে ক্লাস করতে লাগলাম।
এখন শীতকাল। অতিরিক্ত শীতে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছি ক্লাসরুমে। শুনলাম আজকে না-কি আমাদের ট্রায়াল ক্লাস হবে। নতুন টিচার ক্লাস নিবেন। হঠাৎ ক্লাসে স্যার ঢুকলেন। আমি তো পুরো থ হয়ে গেলাম স্যারকে দেখে। পরনে একটা ইয়োলো কালারের জ্যাকেট আর জিন্স সেই সাথে চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। কী যে হ্যান্ডসাম লাগছে উনাকে সেটা প্রকাশ করার মতো ভাষা জানা নেই আমার। আর উনার এলোমেলো চুলগুলো আমার মনকেও খানিকটা এলোমেলো করে দিলো।
ক্লাসে এসে চোখ বুলিয়ে, নিজের সম্পর্কে বলতে শুরু করলেন। উনার নাম ইয়াসির। উনার মতো উনার নামটাও বেশ সুন্দর। বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক উনি। নিজের পরিচয় দেওয়া শেষ করে পড়াতে লাগলেন। আমি অনেক মনোযোগ দিয়ে উনার ক্লাস করতে লাগলাম। শুধু ক্লাস করলাম বললে ভুল হবে, উনার দিকেও তাকিয়ে ছিলাম। দেখতে যেমন সুন্দর উনার পড়ানোর পদ্ধতিও অনেক সুন্দর। আমি তো পুরো ফিদা হয়ে গেলাম। অনেক ভালো পড়াতে পারেন উনি, একটা ক্লাস করে যা বুঝতে পারলাম।
অনেকদিন হলো উনার ক্লাস করছি। অন্যসব ক্লাসের জন্য একজন ক্যাপ্টেন আর শুধু মাত্র উনার ক্লাসে আমাকে ক্যাপ্টেন করলেন উনি। আমি কৌতুহল নিয়ে উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, "স্যার, একজন ক্যাপ্টেন থাকা সত্ত্বেও আপনার ক্লাসে আমাকে কেন ক্যাপ্টেন করলেন?"
একটা হাসি দিয়ে উনি বললেন, "সোনিয়া, তুমি ক্লাসে সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রী। তাই আমার ক্লাসে তুমিই ক্যাপ্টেন।"
উনি যে আমাকে পছন্দ করেন বলে ক্যাপ্টেন করেছেন, সেটা আমি বুঝতেও পারলাম না। উনি যে সুযোগ খোঁজেন আমার সাথে কথা বলার জন্য এটাও আমি ধরতে পারলাম না।
তিন দিনের জন্য আমি নানুর বাসায় বেড়াতে এলাম। সবাই মিলে অনেক মজা করলাম তিন দিন। বেড়ানো শেষ করে বাসায় ফিরে এলাম। কারণ কালকে কোচিং-এ সাপ্তাহিক পরীক্ষা আছে।
পরীক্ষা চলছে আর হলে গার্ড দিচ্ছেন আমার মাস্টার মশাই। আমি মনে মনে উনাকে 'মাস্টার মশাই' বলে ডাকি। আমি আমার মতো পরীক্ষা দিচ্ছি কিন্তু উনি আমার সাথে আজকে একটা কথাও বলছেন না। অথচ যেইভাবেই হোক না কেন আমার সাথে কথা বলার সুযোগ খোঁজেন আর আজকে কোনো কথাই বলছেন না। অদ্ভুদ ব্যাপার? আমি আর কিছু না ভেবে পরীক্ষা দিতে লাগলাম। পরীক্ষা শেষ করতেই আমার বান্ধবীরা আমায় চেপে ধরে বলতে লাগলো, "ঐ সোনিয়া, ইয়াসির স্যারের সাথে তোর কি চলে রে ভাই?"
শয়তান গুলার কথা শুনে আমি তো পুরো হতবাক হয়ে গেলাম। অবাক চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "কী বলছিস তোরা এসব?"
"আরে, তুই যে তিনদিন আসিসনি স্যার তোর কথা অনেক বার জিজ্ঞেস করেছেন। কেন আসিসনি? কোনো সমস্যা হয়েছে না কি? কবে আসবি? আবলাআবলা।"
ওদের কথা শুনে বুঝতে পারলাম মাস্টার মশাইকে বলে যাইনি বলে আমার উপর অভিমান করেছেন। আর তাই আজকে কোনো কথাও বলেননি আমার সাথে। এসব ভাবতেই ঠোঁটে আমার লাজুক হাসি ফুটে উঠলো।
আমি তো এবার নবম শ্রেনীতে তারপর বিজ্ঞান শাখায় তাই আম্মুকে বলে উনাকে প্রাইভেট টিউটর করলাম। কারন উনি বিজ্ঞানের বিষয়গুলো অনেক ভালো পড়ান। কিন্তু একবারের জন্যও আমি বুঝতে পারলাম না যে আমার কাছাকাছি আসার সুযোগটা আমি নিজেই করে দিলাম উনাকে।
উনি আমাকে দুপুরের দিকে পড়াতে লাগলেন। আর আমার কোচিং বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত। সব সময়ই উনি বই খাতার দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিন্তু আমাকে অংক করতে দিয়ে ঠিকই চুপিচুপি আমাকে তাকিয়ে দেখেন। আমি যেনো বুঝতে না পারি তাই অংক করতে দিয়ে তাকিয়ে থাকেন।
মাত্র একমাস পড়িয়ে তিনি আর পড়ালেন না আমাকে।কোনো একটা জরুরি কাজে ঢাকায় চলে গেলেন। উনি চলে যাওয়াতে অনেক কষ্ট লাগলো আমার। তবে উনার সাথে ফেইসবুকে কথা হয় মাঝে মাঝে। ইদানীং উনি ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে কী যেন বলতে চান আমায়। আমি সব না বুঝলেও একটু একটু বুঝতে পারলাম যে উনি আমায় পছন্দ করেন। আর মনের কথা সোজাসুজি বলতে পারছেন না। তাই ঘুড়িয়ে পেচিয়ে বলার চেষ্টা করছেন। আমি বুঝে বুঝে শুধু মুচকি মুচকি হাসি আর ভাবি আমার মাস্টার মশাই আমাকে পছন্দ করেন। ইশ, ভাবা যায় এটা? অনেক দিন হয়ে গেলো কিন্তু তাও উনি বলতে পারছেন না। আমার খুব রাগ লাগছে যে ভালোবাসে কিন্তু কেন বলে না?
শেষ মেশ আর ধৈর্য ধরে রাখতে না পারলাম না। ভাবলাম উনার আশায় যদি বসে থাকি তাহলে এই জন্মেও আর মাস্টার মশাইকে ভালোবাসা হবে না। তাই আজকেই ফেইসবুকে প্রপোজ করবো বলে ঠিক করলাম। যেই ভাবা সেই কাজ, "আপনাকে একটা কথা বলবো?"
"হ্যাঁ, বলো।"
"আই লাভ ইউ।"
অপেক্ষা করছি ফোন হাতে নিয়ে কিন্তু উনার কোনো উত্তরই আসছে না। হঠাৎ একটা ম্যাসেজ আসলো, "আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দাও।"
"ঠিক আছে।"
আমাকে গুনে গুণে তেরোটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। আমিও সবগুলোর সঠিক উত্তর দিতে পারলাম। তারপর উনি আমাকে বললেন, "প্রশ্নের সঠিক উওর দেওয়ার জন্য পুরষ্কার স্বরূপ আই লাভ ইউ টু"
কী রকম সাংঘাতিক একটা লোক রে বাবা? এই জন্যই টিচারের প্রেমে পড়তে নেই। সবকিছুতেই শুধু প্রশ্ন করে। কিন্তু উনার উত্তর পেয়ে আমি যার পর নাই খুশি হয়েছি। আর লজ্জায় মুচকি মুচকি হাসছি। এভাবেই শুরু হলো আমার আর আমার মাস্টার মশাইয়ের নতুন পথচলা।
_________________ সমাপ্ত _______________________
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
Bangla Golpo #লেখনীতে_কথা_চৌধুরী❤ অন্য সবার মতো আমারও অনেক ইচ্ছে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করবো। আর ইচ্ছে পূরণ করতে ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগও প...
Stories__ Don't Judge A Book By It's cover🙂
Bangla Golpo
#লেখনীতে_কথা_চৌধুরী❤
অন্য সবার মতো আমারও অনেক ইচ্ছে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করবো। আর ইচ্ছে পূরণ করতে ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগও পেয়ে গেলাম। আজকে ভার্সিটিতে আমার প্রথম ক্লাস। তাই তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ভার্সিটিতে চলে এলাম।
ভার্সিটিতে ঢুকতেই অন্য রকম একটা ভালো লাগা কাজ করতে শুরু করলো সাথে একটা চাপা ভয়ও লাগছে। কারণ আধুনিক এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সবাই বাহারি বাহারি পোশাক আর সাজসজ্জা করে এসেছে। এদিকে আমি সামান্য সুতি কাপড়ের থ্রিপিস, মাথায় হিজাব, চোখে কালো ফ্রেমের চমশা আর পায়ে নরমাল জুতো ছাড়া তেমন কিছুই পড়িনি। এছাড়া সাজসজ্জা থেকে আমি সবসময় দূরেই থেকেছি।
ক্লাস কোথায় খুঁজে পাচ্ছি না। কিন্তু কাউকে জিজ্ঞেস করারও সাহস হচ্ছে না। গুটিগুটি পায়ে হেঁটে অনেক কষ্টে ক্লাস খুঁজে পেলাম। ক্লাসে ঢুকতেই কয়েকজন আমার দিকে কেমন করে যেন তাকালো। আমি বুঝতে পেরেছি আমার পোশাক-আশাকের জন্যই তারা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে। আমি চুপচাপ দ্বিতীয় সারির তৃতীয় চেয়ারে বসে পড়লাম।
ক্লাস শুরু হয়ে গেল। সবাই ক্লাসে এসে পছন্দ মতো জায়গায় বসলো। কিন্তু আমার পাশে কেউ বসলো না। পুরো সারিতে আমি একাই বসে আছি। এটা আমার জন্য নতুন কিছু না। এসবে আমি অভ্যস্ত তাই একটু খারাপ লাগলেও তেমন কিছু মনে হয়নি আমার। এভাবেই একা একা দিন পার করতে লাগলাম।
ক্লাস টেস্ট নেওয়ার সময় চলে ঘনিয়ে এলো। ক্লাস টেস্ট দিয়ে দিলাম। তিনদিন পর স্যার ফলাফল জানালেন। যখন আমার ফলাফল জানানো হলো, তখন সবাই কিছুটা অবাক হলো। কারণ ক্লাস টেস্টে আমি প্রথম হয়েছি। এরপর থেকে দুই একজন আমার সাথে কথা বললেও আমার পাশে কেউ বসতে চাইতো না। আমি অবশ্য কাউকে আমার পাশে বসার জন্য কখনও বলতাম না। কারণ জানি বলেও কোনো লাভ হবে না। কিন্তু যখন মিড টার্ম পরীক্ষা দেওয়ার পর ফল প্রকাশ হলো, তখন তারা আরও অবাক হলো। কারণ এই পরীক্ষায়ও আমি প্রথম হয়েছি তাও সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে। এরপর থেকে অনেকেই আমার সাথে কথা বলতে লাগলো এবং আমার পাশে এসেও বসতে লাগলো।
ফাইনাল পরীক্ষার সময় তো সবাই মিলে আমাকে ডাকাডাকি করতে শুরু করলো। আমি যেন তাদের পাশে গিয়ে বসি। আমি ওদের কিছুই বললাম না শুধু চুপচাপ ওদের কথা শুনছি আর ভাবছি যে, একদিন কেউই আমার পাশে বসতে চায়নি আর আজ ওরা নিজে থেকেই আমাকে ডাকছে ওদের পাশে বসার জন্য। ওরা কখনও জানতেই পারেনি যে, আমি কোটিপতি বাবার একমাত্র মেয়ে। আমি আমার এই সাধারণ পোশাকের আড়ালে নিজের আসল পরিচয়টা সবসময় লুকিয়ে রাখতাম। কারণ আমি সবসময় চাইতাম সবাই আমাকে ভালোবাসুক আমার যোগ্যতায় আমার গুণে। আমার বাবার অর্থের জোরে নয়। আর পোশাক-আশাক দিয়ে মানুষকে যাচাই করা যায় না বা যাচাই করা উচিতও না।
সমাপ্ত
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ)
Bangla Golpo লেখিকাঃতৃষ্ণা_জান্নাত ক্রাশের আগামী পরশু জন্মদিন। এই দিনটাকে যেভাবে হোক কাজে লাগাতেই হবে। অনেক অপেক্ষা করেছি এমন একটা দিনের জন্...
গল্পঃইম্প্রেস
Bangla Golpo
লেখিকাঃতৃষ্ণা_জান্নাত
ক্রাশের আগামী পরশু জন্মদিন। এই দিনটাকে যেভাবে হোক কাজে লাগাতেই হবে। অনেক অপেক্ষা করেছি এমন একটা দিনের জন্য৷
অনেক কষ্টে তাকে রাজি করিয়েছি পরশু আমার সাথে দেখা করার জন্য। সে রাজি হয়েছে বলেছে তার বাসায় সন্ধ্যার বার্থডে পার্টিতে জয়েন করতে। তার ফ্যামিলি মেম্বার, বন্ধুরা সহ অনেকেই থাকবে। আমি এখন ভাবছি কিভাবে তাকেসহ তার ফ্যামিলিকে পটানো সম্ভব।
'উমমমম! তাকে একলা ছাদে ডেকে সামনে হাটু গেঁড়ে বসে গোলাপ দিয়ে বলব, আই লাভিউ নাকি রিং দিয়ে বলব উইল ইউ ম্যারি মি?'
-ধুর! এসবে কাজ হবে না। এগুলো করে তো ছেলেরা। আর কেউ যদি দেখে ফেলে তবে সর্বনাশ।
তাহলে গিয়ে হাত চেপে ধরে বলবো 'ভাই প্লিজ ফিরিয়ে দিয়েন না আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি আর অনেক ভালোবাসি'
-মাথা পুরাই গেছে। ভাই বললে সে তো বলবে আচ্ছা বোন আমিও তোমাকে ভালোবাসি।
নাহ্! এভাবে হবে না। আর এতে তো ফ্যামিলির কেউ পটবে না উল্টো ছ্যাচড়া বলবে আমাকে।
কি করা যায়?
-গুগলে সার্চ করা যায়!
কিভাবে বাঙালি মেয়েরা তার পছন্দের মানুষের সাথে প্রথম দেখা করতে যায়, কিভাবে ইম্প্রেস করে তাদেরকে।
সার্চ করার রেজাল্ট তো দেখছি বাঙালি মেয়ে মানেই শাড়ি আরকি শাড়ি'তেই নারী। কিন্তু আমার তো শাড়ি নাই। তাছাড়া আমি শাড়ি পড়তেও পারিনা। আর হাতে একটা টাকাও নাই যে পার্লারে গিয়ে সেজেগুজে আসবো। তাছাড়া গিফ্ট কিনতেও তো কম হলে পাঁচ হাজার টাকা লাগবেই। কি করা যায়!
মা'কে শাড়ির কথা বললে দিবে ঝাটার বারি। একবার মায়ের শাড়ি পড়ে পিকনিকে গিয়েছিলাম বাসায় আসার পর দেখি শাড়ির প্রিন্টের থেকে আমার লাগানো দাগের প্রিন্ট'ই বেশি। সেবার থেকে মা বলেছে শাড়ির নাম বললেই খাবো ঝাটার বারি।
এখন কি করা যায় ভাবছি!
অতঃপর মাথায় দারুন একটা আইডিয়া এসেছে।
মা?
-কি বল?
''তুমি না বলেছিলে সেদিন, ভালো একটা পাত্র আছে। ছেলের বাবা-মা সহ কয়েকজন আসতে চায় আমাকে দেখতে''
-হ্যাঁ বলেছিলাম তো। তুই তো সেটা শুনেই রাগারাগি করে ফ্রিজে, প্রত্যেকটা বাথরুমে, কিচেনসহ সব আলমারিগুলোতে তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে নিজের রুমটাও বন্ধ করে দিলি। বললি যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা তোকে কথা দিচ্ছি যে তোর বিয়ের কথা আমরা তোর পারমিশন ছাড়া ভাববো না ততক্ষণ তুই তোর রুমও খুলবি না আর চাবিও দিবিনা কোনো কিছুর। তারপর থেকে তো আমরা তোর বিয়ের কথা ছেড়েই দিয়েছি ভাবা।
"হ্যাঁ সেটা আমি বলেছিলাম। কিন্তু মা এখন আমি তোমাদেরকে পারমিশন দিচ্ছি যে ছেলেপক্ষকে আসার জন্য আমাকে দেখতে।"
-ওরে বাবা! হঠাৎ কি এমন হলো শুনি যে আপনি যেচে পড়ে এসে বিয়ের কথা বলছেন?
"মা! তুমি কি চাও আমি আজীবন তোমাদের বোঝা হয়ে থাকি? পাড়াপ্রতিবেশি তোমাদের কথা শুনাক?"
-অবশ্যই চাই না। আর তুই তো আমাদের কাছে বোঝা না। সন্তান কখনও বোঝা হয়।
"হ্যাঁ তা ঠিক। তবে তোমাদেরও তো বয়স হয়েছে জামাইয়ের মুখ দেখতে তো ইচ্ছে করে। তাই বলছিলাম যে তোমারা তাদেরকে পরশু সকালেই আসতে বলো।"
-পরশু? পরশু সকালেই কেন? তাদের সময়ের বিষয় আছে না!
"তাদেরকে তো পরশু বলবে না। তাদেরকে এখন কল করে বলবে যে পরশু বিকেলে আসতে। তাহলে তারা পরশু ফ্রী হয়ে থাকবে।"
-পরশুই কেন তাদের আসতে হবে। পরে আসলে সমস্যা কি?
"না মা পরশুই লাগবে৷ তারপর হলে কিন্তু আমি পারবো না।"
-আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখতেছি।
"আর একটা কথা!"
-বল?
"আমি কিন্তু ঐদিন তোমার একটা শাড়ি পড়বো আর পার্লারে গিয়ে সাজবো। টাকা কিন্তু তুমি দিবে।"
-আচ্ছা ঠিক আছে।
অবশেষে পার্লারে এলাম।
বিউটিশিয়ান আপু জিজ্ঞেস করলেন "আপু কিভাবে সাঁজতে চান?"
আমি বললাম 'সিম্পলের ভিতরে অল্প একটু গর্জিয়াস আরকি আপু যেভাবে সাঁজলে কেউ চোখ ফেরাতে পারবে না বাংলা নাটক-সিনেমার মত দেখলেই দু'চোখে তাক লেগে যাবে'
আপু আমার কথা শুনে হাহা করে হেসে উঠলেন।
সাঁজা শেষে আমি আয়নায় তাকাতেই আপুকে বললাম "আপু আপনি কি আমাকে সাঁজানোর বদলে প্লাসটিক সার্জারী করে দিয়েছেন নাকি?
আপু আবারও হাহা করে হেসে উঠলেন।
আমি বাসায় ফিরলাম। গিয়ে দেখি ছেলেপক্ষ অলরেডি আমার জন্য ওয়েট করছে৷ আমি যেতেই মা বললো আয় মা বসতো এখানে।
আমি মাথায় কাপড় দিয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে বসলাম। আমি বসতেই পাশের বাসার আন্টি আমার প্রশংসা জুড়ে দিলেন তাদের কাছে। আমি নাকি সকাল থেকে এসব নাস্তা বানিয়েছি, পিঠা বানিয়েছি, পায়েস রেঁধেছি। তারপর নাকি পাশেই একটা বান্ধবীর বাসায় গিয়েছি শাড়ি পড়তে।
অথচ আমি এখনও লবন আর চিনির পার্থক্য মুখে না দিয়ে বুঝতেই পারিনা। রান্না তো দূরের।
যাই হোক ছেলেপক্ষ এবার আমাকে প্রশ্ন করা শুরু-
"কি নাম তোমার মা?"
-তৃষ্ণা।
"কিসে পড় তুমি?"
-অনার্স তৃতীয় বর্ষ।
"কোন সাবজেক্ট?"
-ইংরেজি।
"বাহ্ ভালো সাবজেক্ট তো। তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
-আপাতত ইম্প্রেস করা।
" মানে?"
-ওহ্ স্যরি আরকি ইস্টাব্লিশ্ড হওয়া।
"ওহ্ আচ্ছা। কি কি রান্না জানো তুমি?"
-অনেক কিছুই।
ছেলের ছোট ভাই বললো "আপু আপনার প্রিয় একটা রান্নার রেসিপি বলেন তো?"
-পরিমান মত চাল ভালো ভাবে ধুয়ে তাতে পরিমাণ মত পানি দিয়ে রাইচ কুকারে বসিয়ে দিলেই কিছুক্ষণ পরে ভাত রান্না হয়ে যাবে।
আমার এমন কথায় আমার বাবা-মা আত্মীয় স্বজনসহ ছেলেপক্ষ সবাই হতভম্ব হয়ে গেলেন।
হতভম্ব কাটিয়ে ওঠার জন্য একজন বললো 'মা একটু হেটে দেখাও তো!"
-আন্টি দরজা দিয়ে আমি হুইল চেয়ারে এখানে আসিনি যদিও। তারপরেও যখন বলছেন দেখাচ্ছি।
আমার এমন কথার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না। ছেলের খালা উঠে বললেন আচ্ছা মা তোমার চুলগুলো দেখি তো একটু মাথার কাপড়টা সরাও।
আমি চুল দেখাতেই তিনি বললেন "বাহ্ মাশাল্লাহ! আচ্ছা মা শাড়ি পড়তে পারো না তাইনা?"
-পারলে কি আর পার্লারে যাই বলেন। কতগুলো টাকা দিয়ে আসলাম এই সাজগোছের জন্যে।
তার হাসি মুখটা মলিন হয়ে গেলো আমার এমন উত্তরে।
সবাই চুপচাপ। আমি বললাম "আচ্ছা আপনাদের ছেলে আসে নি কেন?"
ছেলের মা বললো "আসলে আজ ওর একটা বিশেষ দিন তো তাই একটু বিজি আছে৷ আমরা এখান থেকে গেলেই ও............"
কথা শেষ করার আগেই বললাম "ওহ্ আচ্ছা। সমস্যা নেই। ছেলে আসেনি তো কি হয়েছে আপনারা তো এসেছেন। আমরাও একদিন বিশেষহীন দিনে গিয়ে আপনার ছেলেকে দেখে আসবো। তাকে সাঁজিয়ে গুজিয়ে রাখবেন।"
আমি কিছু বললেই পরিবেশটা একদম শান্ত হয়ে যায় দেখছি! পরিবেশে একটু হৈ চৈ আনার জন্য বললাম "আচ্ছা চুল দেখালাম, হেটে দেখালাম এবার খেয়ে দেখাই?"
বলেই সামনে সাজানো খাবারগুলো খাওয়া শুরু করলাম। পেটে খুব ক্ষুধা। সকালে উঠেই পার্লারে গিয়ে বসে আছি। খিদা তো লাগারই কথা। অবশ্য আমার সকাল মানে ১২ টা।
খেতে খেতে পাশের বাসার আন্টির দিকে তাকিয়ে বললাম "খুব ভালো হয়েছে আন্টি। এগুলো নিশ্চয়ই আপনি বানিয়েছেন!"
ছেলেপক্ষকে বললাম "নিন! লজ্জা করছেন কেন? খুব মজা হয়েছে। তাছাড়া আপনাদের জন্যই এগুলো করা হয়েছে।"
পরিবেশটাতে এবার সত্যিই হৈচৈ লেগে গেছে। ছেলেপক্ষ উঠে চলে যাবার উপক্রম।
আমি তখন বললাম "কি ব্যাপার আপনারা মেয়ে দেখে কোনো টাকা-পয়সা না দিয়ে চলে যাচ্ছেন কেন? আমি বিভিন্ন মেয়েদের গ্রুপে দেখেছি মেয়ে দেখে ছেলেপক্ষরা দশ হাজার, পনের হাজার করে টাকা দেয়। আপনাদের যেহেতু মেয়ে পছন্দ হয়নি সেহেতু পাঁচ হাজার টাকা তো দিবেন"
আমার কথা শেষ করে আমার পক্ষের দিকে তাকাতেই দেখি সবার চোখ কপালে উঠে ডিম হয়ে রয়েছে। একটুপরেই অমলেট হয়ে যাবে তাপে।
ছেলেপক্ষ থেকে ছেলের বাবা এসে হাতে পাঁচ টা কচকচে এক হাজার টাকার নোট দিয়ে বললেন দুঃখিত আমাদের মনে ছিলো না।
আমি হাসি দিয়ে বললাম "নাহ্ ঠিক আছে আমি এখন আর কিছু মনে করবো না। ধন্যবাদ আবার আসবেন।"
তারা বের হওয়ার পরই আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। মা'কে দেখেছি ঝাটা খুঁজতে গেছেন। বাবা মা'কে হেল্প করার জন্য সাথেই গিয়েছে। ছোট বোনটাকে দায়িত্ব দিয়েছে দরজা বন্ধ করার। আমি ওকে বললাম "যেতে দে বইন। আসার সময় এক বক্স চকোলেট আর সাথে করে তোর দুলাভাই নিয়ে আসবো চিন্তা করিস না।"
বের হয়ে সোজা ক্রাশের জন্য গিফ্ট কিনে তার সঙ্গে দেখা করতে চলে গেলাম তার বাসায়।
নায়িকাদের মত স্লো মোশনে হেঁটে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে কলিংবেল বাজাতেই দেখি ক্রাশ দরজা খুলে দিলো।
আমি মিষ্টি হাসি দিয়ে হ্যাপি বার্থ ডে বলে গিফ্ট টা আগাতেই এক মহিলা "কে এসেছে রে?" বলতে বলতে দরজার কাছেই চলে এলেন।
আমি তার দিকে তাকাতেই ক্রাশ পরিচায় করিয়ে দিলেন "ইনি তার মা"
আমি তাড়াহুড়ো করে গিফ্ট টা ক্রাশের মায়ের হাতে দিয়ে বললাম এটার দাম পাঁচ হাজার টাকা আন্টি। রেখে দিন।
-বলেই দিলাম দৌড়।
এক দৌড়ে নিচে নেমে এসে দম নিচ্ছিলাম আর ভাবলাম যাক বেঁচে গেছি ভাগ্যিস ক্রাশ খবরটা আমি যাওয়ার আগে জানেনি। তাহলে আমার খবর ছিলো। কিন্তু এখন তো সে জেনে গেছে যে তার জন্যই আজ আমাকে তার বাবা মা দেখতে গিয়েছিলেন। ভাবতেই হঠাৎ দেখি পিছনে ক্রাশ চিৎকার করে বলছে "ঐ মেয়ে দাড়া। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।"
আমি তাড়াতাড়ি একটা রিক্সায় উঠে পড়লাম আর চিৎকার করে বললাম "ভাই আমি কি কাউরে গালি দিছি? আমি তো ইম্প্রেস করার জন্য পাঁচ হাজার টাকাই দিয়া গেলাম। একটাও টাকা রাখিনি""
সমাপ্ত
Bangla Golpo লেখাঃ- মোঃ আবীদ আবরার। নাদিয়া আমার ছাত্রী। আজকে পড়ানোর সময় দেখি তার বইয়ের ভাঁজে রঙিন একটা চিরকুটে লেখা " বড্ড বেশি ভালোবাস...
গল্পঃ- নাদিয়া