অক্টোবর ১৭, ২০২১
কিছুক্ষণ আগেও সে জানত না আজই তার জীবনের
Bangla Golpo কিছুক্ষণ আগেও সে জানত না আজই তার জীবনের সমাপ্তি রেখা টানা হবে। অথচ এখন অনুভব করছে মৃত্যুক্ষণে ক্ষণে তার দিকে একপা এক পা করে এগি...
রহস্যময় সিরিজ {গল্পঃআতঙ্ক}
রহস্যময় সিরিজ {গল্পঃআতঙ্ক}
রহস্যময় সিরিজ {গল্পঃআতঙ্ক}
8
10
99
Bangla Golpo
কিছুক্ষণ আগেও সে জানত না আজই তার জীবনের
সমাপ্তি রেখা টানা হবে।
অথচ এখন অনুভব করছে মৃত্যুক্ষণে ক্ষণে তার দিকে একপা এক পা করে এগিয়েআসছে।
আর এর বিরুদ্ধে সে কিছুই করতে পারবে না।
এখন সে ভাগ্যের হাতে বন্দি।
এই আধারের মধ্যেও সে প্রাণীগুলোকে স্পষ্ট
দেখতে পাচ্ছে।
গড়গড় শব্দকরতে করতে সেগুলো তার
দিকে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে।
সে আরেকটিবার চিৎকার করার চেষ্টা করল।
তবে সামনে থাকা চারপেয়ে যমদূত সেই সুযোগ
না দিয়ে তার কণ্ঠনালি লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিল।
রহস্যময় এই নতুন সিরিজে আপনাদের সবাই কে জানাচ্ছি স্বাগতম।
#প্রথম_গভীর_রাত
ফয়সাল আরেকবার ভাগ্যকে গালি দিয়ে একটি
সিগারেট ধরালো।
কিছুদিন যাবৎ তার এই বদ-অভ্যাসটা হয়েছে।
অবশ্যতার রুমমেট সোহেলের ধারণা সিগারেট মোটেই
বদ-অভ্যাস না।
বরং এটা একটি #আশ্রয়। পৃথিবী থেকে দূরে, এই সভ্য জগত থেকেও বহু দূরে, একটি নিরাপদ #আশ্রয়।
#অবশ্য একথাও সত্য যে সোহেল সিগারেটে কিছু
মাল-মশলা ঢুকিয়ে তারপর বেশ আয়েশ করে টান
লাগায়।
আজ মনে হয় অমাবস্যা। ফোনের ফ্ল্যাশ লাইটটাই
ফয়সালের একমাত্র ভরসা।
ষোল হাজার দিয়ে কেনা ফোনটাও যে খুব ভাল সার্ভিস দিচ্ছে এমন নয়।
ফ্ল্যাশ দেখে মনে হচ্ছে ফোনের জন্ডিস হয়েছে।
কঠিন জন্ডিস।
নিমগাছের বাকল বেটে না খাওয়ালে
এই জন্ডিস সারবে না।
অনেক ছোটবেলায় ফয়সালের জন্ডিস হয়েছিল।
তখন মা তাকে নিমগাছের বাকল বেটে চায়ের চামচে
করে খাইয়েছিল।
কি যে বিচ্ছিরি খেতে! বাকলের স্বাদ মনে পড়তেই
সোহেলের শরীর এই ভ্যাপসা গরমের মধ্যেও কেঁপে উঠল।
কি #আশ্চর্য! কতদিনের পুরোনো ঘটনা, অথচ ফয়সালের মনে হচ্ছে যেন এই সেদিন ঘটেছে।
এমন কেন হচ্ছে? আজ তার মা এই পৃথিবীতে নেই বলেই কি এমন হচ্ছে? মা কি আকাশে বসে বসে তার পুত্রের ওপর মায়ার কাঠি নাড়ছে? মায়ের কথা মনে পড়তেই ফয়সালের মনটা কেমন যেন করে ওঠে।
এই তো গতকালও তো মা জীবিত ছিল। ফয়সালের সাথে দুপুরে ফোনে আধঘন্টার ওপরেকথা বলেছিল।
সেটাই মায়ের সাথে তার শেষ কথোপকথন। সন্ধ্যার পর ফয়সালের ছোট ভাই ফোন করে তাকে মৃত্যুর সংবাদ
দেয়।
গ্রামের ফাঁকা রাস্তা। ফয়সাল হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে।
হাতের সিগারেটটা শেষ হয়ে যাওয়ায় থেমে আরেকটা সিগারেট ধরাতে যাবে আর তখনই মনে হল পেছনে কেউ একজন এসে দাঁড়িয়েছে।
চুপচাপ দাঁড়িয়ে ফোস ফোস করে নিঃশ্বাস ছাড়ছে। যেন অনেক ক্লান্তিকর কোনো কাজ করে এসেছে।
ফয়সাল নিজেকে সাহসী বলে মনে করে না, তবে
ভালভাবেই জানে সে নিজে অনেক কঠিন যুক্তিবাদী মানুষ।
তবে এই মুহূর্তে তার যুক্তিবাদী মন তাকে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হল।
তার মনে হল তারপেছনে যে দাঁড়িয়েছে সে মানুষ নয়, অন্য কিছু।
উল্টোপাল্টা চিন্তাভাবনা শুরু করায় মনকে কষে একটা ধমক লাগিয়ে চট করে পেছন ফিরে মনে মনে হেসে
ফেলল।
হ্যা, তার যুক্তিবাদী মন ঠিকই ধরেছে। এটা কোনো মানুষ নয়।
ফ্ল্যাশ লাইটের আলোয় সে আবিস্কার করল একটি কঙ্কালসার কালো কুকুর তার দিকে তাকিয়ে জিব বের করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে।
দেখে মনে হচ্ছে পৃথিবীতে অক্সিজেনের বড়ই অভাব।
প্রাণীটার উদ্দেশ্যেফয়সাল হালকা গলায় বলল,
‘কিরে কাল্লু, এত রাতেকোথায় যাওয়া হচ্ছে?’
‘বাইত্তে।’
কথাটা শুনতেই ফয়সালএতটাই চমকে উঠল যে হাত থেকে ফোনটি ছিটকেরাস্তায় পড়ল আর সাথে সাথেই বন্ধ হয়ে গেল।
সে ডুবে গেল গাঢ় অন্ধকারে।
#দ্বিতীয়
‘আহহা! ফোনডা মনে হয় গেল।’
লোকটি অন্ধকারের মধ্যে রাস্তায় হাতরে বেড়াতে
লাগল ফোনটি খোঁজার জন্য।
ফয়সাল নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
‘কে আপনি?’
লোকটি বলল,
‘আমি আসফাক উদ্দিন। এই গেরামের লোক।
ভাইসাব কি ডরাইছেন?’
‘না মানে খানিকটা চমকে গিয়েছিলাম এই আর কি।’
‘এই নেন আপনের মুবাইল’,
লোকটা ফয়সালের হাতে তার ফোন ধরিয়ে দিল।
ফয়সাল ভেবে পেল না এই অন্ধকারের মধ্যে লোকটি ফোন খুঁজে পেল কি করে আর তাকে দেখছেই বা কি
করে।
ফোন হাতে নিয়ে ফয়সাল সেটাকে অন করার চেষ্টা
করল।
ষোল হাজার টাকা এক আছাড়েই শেষ হয় নি প্রমাণ
করে ফোনটি মৃদু ভাইব্রেট করে জ্বলে উঠল।
ফয়সাল ফোনের স্ক্রিনের আলো আসফাক উদ্দিনের মুখে ফেলতেই মানুষটি এক লাফে দুই হাত পেছনে সরে গেল।
এবং চেঁচিয়ে বলতে লাগল,
‘আলো মাইরেন না ভাই, আলো মাইরেন না!’
ফয়সাল দ্রুত ফোনের স্কিন
বন্ধ করে বলল,
‘আচ্ছা আচ্ছাঠিক আছে। আমি আলোফেলব না আপনি দয়া করে চেঁচানো বন্ধ করেন।’
‘হাজার শুকরিয়া ভাই।’
‘কিন্তু আলো ফেললে সমস্যা
কোথায়?’
‘সমস্যা আছে রে ভাই, সমস্যা আছে। এই ভোলা এই
দিকে আয়।’
ফয়সাল আবার ফোনের স্কিন জ্বেলে দেখল কুচকুচে
কালো কুকুরটি লোকটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সঙ্গত কারনেই সে লোকটির মুখে আলো ফেলা থেকে
বিরত থাকল। লোকটি বলল,
‘আপনে দয়া কইরা আমার মুখে আলো মাইরেন না।’
‘কেন'
‘ওইটা আমি বুঝাইতে পারুম না। তা, আপনে এত রাইত্তে কই থেকে আসলেন ভাইসাব?’
‘ঢাকা থেকে।’
‘ও আচ্ছা। এই গেরামে কি কোনো আত্নীয় থাকে?’
‘এই গ্রামেই আমি বড় হয়েছি। গতকাল আম্মা
মারা গিয়েছে।
আগামীকাল তারজানাজা।
শেষের কথাটাবলার সময় ফয়সালের গলাটা কেপে উঠল।
‘ও তাইলে আফনে ফয়সাল,রহিম আফার পোলা!’
‘জ্বী। আপনি আম্মাকে চিনতেন?’
‘হ, চিনতাম তো। বহুত ভালা মনের মানুষ ছিল। ভালা মনের ছিল বইল্যাই আল্লাহ তারে উঠায় নিছে। আর আমা গো ফেলায় রাখছে অভিসাপী কইর্যা।’
লোকটির কথায় ফয়সাল কেমন যেন #অস্বস্তি বোধ
করতে লাগল।
প্রসঙ্গ বদলাতে বলল,
‘এত রাতে আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’
খুক খুক করে কেশে আসফাক উদ্দিন বলল,
‘বাইত্তে ভাই। আমার বাড়ি আফনেগো বাড়ির একটু পরেই। আহেন একলগে হাঁটা দেই।’ একসাথে হাঁটা দেয়ার ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও ফয়সাল লোকটির পিছু নিল।
নিশুতি রাতের আধারে তিনটি প্রাণী নিঃশব্দে
পাশাপাশি হাঁটতে লাগল।
#তৃতীয়
‘ভাইসাবের কাছে কি বিড়ি হইব?'
‘আমি তো বিড়ি খাই না। তবে সিগারেট আছে চলবে?’
‘জ্বী খুব চলব।’
ফয়সাল লোকটির হাতে একটি সিগারেট দিল।
লোকটি ঠোটে সিগারেট চেপে ম্যাচের কাঠি ধরাল।
সাথে সাথেই পাশ দিয়ে একটি ট্রাক সাই করে চলে গেল।
ট্রাকের হেডলাইটের আলোয় ফয়সাল লোকটির চেহারা অস্পষ্টভাবে দেখতে পেল। আর চেহারা দেখার পরই তার বমি বমি লাগতে লাগল। ফয়সাল নিশ্চিত তার জীবনে দেখা সবচেয়ে বিশ্রি দৃশ্য এটাই।
মানুষ মাত্রই কৌতূহলী। ফয়সাল তার কৌতূহলের কাছে হার মানতে বাধ্য হল।
সে তার ফ্ল্যাশ লাইটটি লোকটির মুখের দিকে তাক
করল।
উজ্জ্বল হয়ে উঠল একটি বিকৃত কুৎসিত চেহারা।
লোকটির এক পাশের গালে কোনো চামড়া নেই। সেই অংশটুকু লাল টকটকে হয়ে আছে।
নাকের এক পাশ কালো কুচকুচে হয়ে দেবে আছে। তবে কোটর ছেড়ে বেড়িয়ে আসা চোখটার কাছে এটুকু কিছুই নয়।
চোখের মনিটা যেন যেকোনো মুহূর্তে ছিটকে
বেড়িয়ে আসার অপেক্ষায় আছে।
ফয়সাল আর পারল না। লাইট নামিয়ে রাস্তার পাশে হাটু গেড়ে বসে এক দলা বমি করল। লোকটি পেছন
থেকে হতাশ সুরে বলে উঠল,
‘এজন্যই এদিকে তাকাইতে নিষেধ করছিলাম।’
ফয়সাল কোনো মতে নিজেকে সামলে বলল,
‘আপনার চেহারা....কি হয়েছে আপনার?’
‘কপাল রে ভাই, সবই কপাল। এক গার্মেন্সে কাম করতাম। একদিন এক দলা এসিড আইয়া লাগল আমার মুখে।
হায়রে ভাইরে, কি যে যন্ত্রণা। না পারি কিছু দেখতে না পারি খাইতে।
আর জ্বালা, তা আর কইতেন। মনে হইত আমার গালডার উপ্রে পিপড়া কামড়াইতাছে।
একটা দুইডা না। হাজার হাজার পিপড়া। না লাখ লাখ পিপড়া এক লগে কামড়াইতাছে।’
‘আপনি ডাক্তার দেখান নাই?’
‘আর ভাই ডাক্তার! ম্যানেজার সাব দুইশো ট্যাকা হাতে ধরায় গার্মেন্স থেইক্যা বাইর কইরা দিছে।
এক ডাক্তারের কাছে গেছিলাম। কিছু উষদ দিছিল। আর কইছে চেহারা আর ঠিক হইত না।’
ফয়সাল উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
‘আমি দুঃখিত।’
‘থাক ভাই এ নিয়া প্যাঁচাল পাইড়া লাভ নাই। চলেন হাঁটা দেই।
নাকি আমারচেহারা দেখার পর আমার লগে হাটতে পারবেন না?’
‘আরে না না। কি যে বলেন।চলেন ভাই।’
তারা আবার হাঁটতে শুরু করলে আসফাক উদ্দিন বলে
উঠলেন,
‘এই দিক দিয়া না গিয়ে একটু শটকাট লই চলেন ভাই।’
‘শর্টকাট?’
‘হ’, পাশের ইটের রাস্তাদেখিয়ে আসফাক উদ্দিনবলল,
‘এই দিক দিয়া গেলে তাড়াতাড়ি বাইত্তেপৌঁছাইতে পারবেন।’
‘তাহলে চলেন শর্টকাট পথই ধরি।’
#চতুর্থ
ফয়সাল খেয়াল করছেরাস্তার দুইপাশের গাছগাছালির ঘনত্ব বাড়ছে।
সে বলল, ‘এইদিকে গাছপালার সংখ্যা মনে হয়
একটু বেশিই।’
‘হ, গাছগুছ কাটে না কেউ।’ ফয়সাল খেয়াল করল কুকুরটি এখনও তাদের সাথে সাথে হাঁটছে। মনে হয় পোষা কুকুর।
পোষা কুকুর সাধারণত এত কঙ্কালসার হয় না। একে মনে হয় আসফাক উদ্দিন খেতে দেয় না। আসফাক উদ্দিন নিজেও মনে হয় খুব ভালভাবে খেতে পায় না।
‘এই কুকুরটা কি আপনার?’
‘কুকুর তো আমার না ভাই। প্রাণের মালিক আল্লাহ। তয় আমি দুই একটু খাইতে দেই বইল্যা ভোলা আমার সাথে সাথেই থাকে।’
‘ও আচ্ছা।’
তারা আবার নিরবে হাটতে লাগল। আকাশে চাঁদের কোনো নিশানা নেই।
তবে প্রচুর তারা দেখা যাচ্ছে। ফয়সালের ফ্ল্যাশই একমাত্র ভরসা।
অবশ্য তার ধারণা আলো ছাড়াও লোকটি দিব্যি
হেঁটে হেঁটে বাড়ি পৌঁছেযেতে পারবে।
‘ভাই আপনি কি করেন?’
‘কিছুই করি নারে ভাই।আমার চেহারা দেইখ্যাকেউ কোনো কাম দেয় না।’
কথাটা শুনে ফয়সালেরখারাপ লাগল। বেচারা নিশ্চই গ্রামে এরওর কাছে চেয়ে চেয়ে দিন চালায়।
‘ভাই আপনে একটু খাড়ান আমি আসতাছি,
’ বলে
লোকটা রাস্তা ছেড়ে হাঁটতে লাগল। পেছন পেছন
কুকুরটাও তার সাথে যেতে লাগল।
ফয়সাল চেঁচিয়ে বলল,
‘এই আপনি যাচ্ছেন কোথায়?’
ঝোপ ঝাড়ের আড়ালে হারিয়ে যেতে যেতেলোকটি বলল,
‘এক নম্বর লাগছে ভাই।’
#পঞ্চম
ফয়সালের ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ব্যাটারি শেষ। রওনা হওয়ার আগে ফোনটাকে চার্জ দেয়া হয় নি বলে এখন সে মনে মনে নিজেকে গাল বকে
চলেছে।
লোকটি এক নম্বর করতে গিয়েছে অনেকক্ষণ হল। এক
নম্বরের সাথে দুই নম্বরও শুরু করল কি না কে জানে।
এদিকে অন্ধকারে মশার দল দারুণ ভোজ শুরু করেছে।
লোকটির যাওয়ার পথে ফিরে সে ডাক দিল, ‘এই
ভাই! কোথায় গেলেন?’
কোনো সাড়া শব্দ নেই।সাড়া শব্দ পাবে এমনটা সেআশাও করে নি। আগেও বারকয়েক গলা ফাটিয়েছে। কিন্তু কেউ উত্তর দেয় নি। ফয়সাল আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারল না। ধীরে ধীরে ঝোপের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। ভাবতে লাগল একাই বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করবে কিনা।
লোকটিকে একা ফেলে যেতে খারাপ লাগছে। অল্প কিছুসময়ের মধ্যেই লোকটির ওপর তার মায়া পড়ে গিয়েছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফয়সাল আবিস্কার করল সে একটি
নদীর পাড়ে এসে পড়েছে।
আর যাই হোক, এখন সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে, ক্রমেই লোকটার ওপর তার বিরক্তির পরিমান বেড়ে
চলেছে।
নদী ধরে এগোনোর কিছুক্ষণ পরই সে তার কয়েকফুট
সামনে কিছু কুকুরের মত প্রাণীকে দেখতে পেল আধারের কারণে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।
ভোলা তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে এসেছে নাকি? সে এগিয়ে যেতে লাগল।
লোকটি হয়ত ওই দিকেই আছে। হাঁটতে হাঁটতে অনেক গুঁতাগুঁতি করে অবশেষে সে ফোনটাকে চালু করতে সক্ষম হল।
ফ্ল্যাশ জ্বলছে না অবশ্য। শুধু একটি সাদা স্ক্রিন দেখা যাচ্ছে। স্ক্রিনে ব্যাটরি লো লেখা।
প্রাণীগুলো কিছু চিবুচ্ছে। হাড় ভাঙ্গার কটমট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শব্দটা মৃদু তবে রাতের নিরবতার কাছে সেই শব্দই কয়েক হাজার গুণ তীক্ষ্ণ হয়ে কানে লাগছে।
সামনের দিকে ফোনের স্ক্রিন তাক করে ‘হুসস’ শব্দ
করতেই প্রাণীগুলো তার দিকে ফিরে তাকাল।
হালকা আলোয় ফয়সাল দেখতে পেল চারপেয়ে প্রাণীগুলোর মুখে রক্তের দাগ লেগে রয়েছে।
সামনেবস্তার মত পড়ে থাকা মৃত দেহ থেকে তারা পরম
তৃপ্তিতে ক্ষুধা মেটাচ্ছে। হতভম্ব হয়ে আরেকটু সামনে এগিয়ে শরীরটার দিকে ফয়সাল আলো ফেলল।
আর সাথে সাথেই....সাথে সাথেই তার সমস্ত শরীর
যেন বরফের দলায় পরিণত হল। দেহটা একটা কফিন পেঁচানো মানুষের! কুকুরগুলো একটি মানুষের লাশ থেকে মাংস খাচ্ছিল! লাশটা আর কারও নয় কুকুরগুলো আসফাক উদ্দিনের কবর খুঁড়ে তাদের ক্ষুধা মেটাচ্ছিল! প্রাণীগুলো মুখ দিয়ে গড়গড় শব্দ করতে করতে তার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল।
যেন রাতের ভোজে বাধা দেয়ায় বেশ বিরক্ত। ফয়সাল
বুঝতে পারল তার প্রত্যেকটি পায়ের ওজন এক টন হয়ে গিয়েছে।
সে একচুলও নড়তে পারছে না, অথচ স্পষ্ট বুঝতে পারছে যমদূত তার থেকে আর মাত্র কয়েক ফুট দূরে।
ফয়সাল চিৎকার করার চেষ্টা করল আর সাথে সাথেই বুঝতে পারল তার গলা থেকে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না।
যেন গলায় তার নিজের বুকের হৃদপিন্ডটিই আটকে গিয়েছে। এই আধারের মধ্যেও দূরে সে আসফাক উদ্দিনের কুৎসিত মুখটি স্পষ্ট দেখতে পেল। জীবনযুদ্ধে হেরে মানুষটি কবরেও শান্তিতে ঘুমুতে পারে নি।
এই মুহূর্তে আফহার উদ্দিনের মুখে ফয়সালের জন্য করুণা ব্যতীত আর কিছুই নেই।
#সমাপ্ত
#গল্পঃআতঙ্ক
রহস্যময় সিরিজ
#কেমন_হয়েছে_অবশ্য_সবাই_জানাবেন
#আর_ভালো_লাগলে_লাইক_কমেন্ট_আর_শেয়ার_করেন
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন